Thursday, 10 October 2013

এ আন্দোলন চেতনার পরিবর্তনের


October’ 2013






                                                           

কাল সকাল ১০ টায় ইংলিশ ব্রেকফাস্ট শেষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জীপে চড়ে, আমি, আমার বউ ইংরেজি স্কুল পড়ুয়া তিন বাচ্চা নিয়ে হাজির হলাম শাহবাগে। সঙ্গে যথারীতি বাপক প্রস্তুতি। মিনারেল পানির বোতল, অয়াইপ টিস্যু, চকলেট, ইত্যাদি। আর আকার জন্য বাসায় কোন চক না পেয়ে নিলাম কিছু ক্রেয়ন, প্যাস্টেল ইত্যাদি। বাচ্চারা অতি উৎসাহী, রাস্তায় শহিদ মিনার আকবে। শিতের মিহি রোদ্দুরে সপরিবারে রাস্তায় শহিদ মিনার আকব, এর চেয়ে রোমান্টিক প্লান তো আর হয়না। কিন্তু শেষটা তেমন ভাবে হলনা।
রক্তাক্ত হলাম আমি, রক্তাক্ত হোল আমার পরিবার। খত বিখখত হল আমার চেতনা।
রাস্তায় নেমে মোড়ের কাছাকাছি মোটামুটি ফাকা একটা জায়গা পসন্দ করে বড় মেয়ে সুবাহ কে বললাম শুরু করে দাও। ও আবার আকাকিতে পুরস্কার প্রাপ্ত, শুরু করে দিল মহা উৎসাহে। ছোট দুজন ওকে সহযোগিতার নামে নানা ভাবে ডিস্টার্ব করতে থাকল। আমার বউ গেল পাশের দোকানে ফুল কিনতে, আমি রাস্তায় রাস্তার পাশে বসে মোবাইল হট স্পট তৈরি করে আই প্যাডে ইন্টারনেটে ঢুকে গেছি। কিছু তরুন দড়ি দিয়ে ঘেরা তৈরি করে আমাদের জমি টুকু আলাদা করে রেখেছে। ধিরে ধিরে রোদ বাড়ছে, জনতার ধল নামা শুরু হয়েছে। রোমান্টিকতা তখন পর্যন্ত ছিলই।
ঘটনাটা কখন ঘটা শুরু হয়েছে, আমি খেয়াল করিনি। তবে, ঘণ্টা দেড়েক পার হয়েছে সম্ভবত। হয়ত আই প্যাডে চোখ থাকায় খেয়াল করিনি, অথবা আমার ঘোলা চোখ এগুলো আর খেয়াল করতে পারেনা। এক টোকাই, আমার মেঝ বাচ্চার বয়সী, , লুঙ্গি পরে, ময়লা গেঞ্জি, উসকোখুসকো চুল, সপ্তাহ খানেক গোছল না করা শরীর নিয়ে; দারিয়ে দেখছে আমাদের আকাআকির উৎসব। সুতীব্র কৌতূহল , আর বিদ্রোহী মন নিয়ে নিজের সাথে যুদ্ধ করছে, নিজেকে দমিয়ে রেখেছে; আমার বাচ্চাদের সাথে যোগ না দেবার জন্য। চড় খাবে নাকি?
হটাত কার জেন ডাকে চমকে তাকালাম। ব্লগারদের একজন আমার কাছে এসে বললেন, “ভাইয়া এই বাচ্চাটার জন্য দু একটা ক্রেয়ন কিম্বা কয়েকটা গাদা ফুল দেয়া যায়? ওঁ ও একটু আঁকুক কি বলব আমি? সমস্ত চিৎকার দিয়ে যদি বলি, সব ক্রেয়ন দিয়ে দাও ওঁর জন্য, তাহলেও তো কম বলা হয়। অস্ফুট স্বরে বললাম অবশ্যই।

এর পর আমার বাচ্চারা ওঁর সাথে মিলেমিশে গেল। তরুন্ রা তাদের জন্য কোত্থেকে বিস্কুট আর পানি এনে দিল। থেকে গেল আমদের বাগে সাথে আনা কিংসের পেস্ট্রি, মিনেরেল ওয়াটার। আমার ছোট মেয়ে তখন রাস্তা থেকে টোকাই এর বিস্কুতের ভেঙ্গে পরা টুকরো গুলো কুড়িয়ে খাচ্ছে। আমি ও বউ তখন উদাশ ভাবে বিশশবিদ্দালয়ের ছেলেদের এনে দেওয়া কলা খাচ্ছি। মস্তিস্কের চেতনায় তখন রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই তরুণরা আমাদের আসলে কি বলতে চায়? যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে এরা এত উত্তাল কেন? না হয় হলই ফাঁসি, তাতে তাদের কি লাভ? এ সমাজের কি লাভ? ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সব চেয়ে বর অর্জন কি হবে? কেমন সমাজের স্বপ্ন তারা দেখে? ৪০ বছরের জীবন পার করেছি সমতা থেকে বেরিয়ে এসে অসম হবার জন্য। কিন্তু চেতনা আজ বিদ্রোহ করছে, বলছে নিয়ে এস বাকিদের, তোমার কাতারে, আবার সম হও।
ওদিকে বাচ্চারা ততখনে ক্রেয়ন আর গাদা ফুলের পাপড়ি দিয়ে বানিয়ে ফেলেছে বিশাল এক শহিদ মিনার, যেটা দেখতে বিকালে ছুটে গিয়েছিল সমস্ত ঢাকার মানুষ।
স্থপতি ইমন, শাহবাগ
Salute to Architect Emon bai. I personally don't know about you but I am very impressed. This is a motivational example for all of us. We should think same like Emon bai, as well should believe “We have no choice of what color we're born or who our parents are or whether we're rich or poor. What we do have is some choice over what we make of our lives once we're here and definitely that choice should be welfare of motherland. From the article of Emon bai I am getting a nice smell yes…….

মা ও মাটির গন্ধ পাচ্ছি। এমন একটি স্বপ্নের স্বদেশ চেয়েছি শৈশব থেকে। মনে হচ্ছে নতুন প্রজন্ম আমাদের চৈতন্য ফিরিয়ে দিয়েছে। বৈষম্য, ক্ষুধা, দুর্নীতি ও  সন্ত্রাসমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার যে আবেগ আজ বাঙ্গালী জাতীর মধ্যে জেগেছে তা সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তা করার সঠিক সময় এখনই। ইমন ভাইয়ের মত আসুন আমরা সবাই আভিজাত্যর খোলস ভেঙ্গে আমাদের সন্তান, আমাদের ভাই-বোনকে এ উপলব্ধিতে উজ্জীবিত করি। অবশ্যই কাংকিত বিজয় আমাদের হবেই হবেই। সবার উপরে মা-মাটি, আর সে হল আমাদের সোনার বাংলাদেশ।