প্রকৃতি যেখানে নিরন্তর অপরূপ সুন্দর ! সবুজ আর সবুজ ! যেনো সবুজের লীলাভূমি।
ঘরের কাছেই, অনেকটাই কাছে - তারপর ও যাওয়া হয়নি গত ৯ বছরে । কবির কথাই আসলে ঠিক। দেখা হয়নি চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু । নানা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছি কিন্তু অপরূপ সুন্দর তো ঘরের কাছেই অবহেলিত যা গত ৯ বছরেই আমার যাওয়ার ইচ্ছে হয় নাই কিংবা সুযোগ হয় নাই। এবার স্কুল হলিডে উপলক্ষে বাচ্চাদের নিয়ে গেলাম সেখানে। বাচ্চাদের তুমুল আপত্তি বন জঙ্গল গাছপালা দেখে লাভ নেই। অনেক কষ্ঠে বুজিয়ে রাজি করলাম। তারপর আর কি। সোজা গন্তব্য - রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেন - সবাই বলে কিউ গার্ডেন। এর সাথে উপরি হিসেবে কিউ প্যালেস (রাজা তৃতীয় জর্জ এর অবসরকালীন বাসভবন) । সময়কাল (১৭৩০-১৮২০) শতাব্দী। আনুমানিক ১২৯৯ সালের দিকে এই গার্ডেন এর পরিকল্পনা করা হয় যখন রাজা এডওয়ার্ড এই এলাকায চলে আসেন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে এর ব্যাপ্তি চলতে থাকে। এরপর মূলত এই বিশাল বাগান এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ১৭৫৯ সালের দিকে। এরপর আজ অবধি এটার পরিবর্ধন হয়ে চলছে। আনুমানিক ১৭৩০ থেকে ১৮২০ সাল নাগাদ রাজা তৃতীয় জর্জ কিউ গার্ডেন কে বেছে নিয়েছিল অবসর বিনোদন এর জন্য। এই লক্ষে তিনি সেখানে বসবাসের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন কিউ প্যালেস। মূলত ভবনটা তিনি কিনে নিয়েছিলেন। পরে সেটাতে রাজার পছন্দ অনুযায়ী সজ্জিত করা হয়েছিল। ভবনটি এখনো সুরক্ষিত আছে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য। মূলত ১৬৩১ সালে ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন এক সৌখিন ব্যবসায়ী। বিশাল ইতিহাস বলে শেষ করা যাবেনা। মূলত ১৮৪০ সল্ থেকে কিউ গার্ডেন নাম পরিবর্তিত হয়ে নাম ধারণ করে রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেন। মূলত তখন থেকে রয়েল হর্টিকালচার সোসাইটি এটার দায়িত্ব বুজে নেয়। এটার উপর প্রয়োজনীয় তর্থ্য জানার সুবিধার্থে কয়েকটা লিংক সংযুক্ত করলাম। আসলে লিখতে হলে বেশ সময় দিতে হয় যা এই মুহুর্ত্তে আমার পক্ষে কিছুটা অসম্ভব। যাই হোক তারপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তর্থ্য নিচে দিলাম। বেশ কিছু ছবি সংযুক্ত করলাম। ছবি দেখে এর সম্পর্কে একটা ভাবলো ধারণা পাওয়া যাবে আসা করি।
কিউ গার্ডেন -
অবস্থান - সাউথ ওয়েস্ট লণ্ডন। Borough - Royal Richmond
বাগানের পরিধি - ১২১ হেক্টর কিংবা ৩০০ একর
প্রজাতির গাছের সংখ্যা - ৩০০০০
Herverium (প্লান্ট লাইব্রেরি ) - সংরক্ষিত প্লান্ট /বীজ/স্যাম্পল এর সংখ্যা -সতের লক্ষ্। যা বিশ্বের সবচেয়ে বড়। উদ্ভিদ বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের/গবেষণার জন্য বিশেষ লাইব্রেরি। লাইব্রেরি তে উদ্ভিদ বিষয়ক বইয়ের/ভলিউম /জার্নাল /ইলাস্ট্রেশন /ছবি সংখ্যা সাড়ে সাত লক্ষ। বিভিন্ন উদ্ভিদের প্রিন্টেড ছবির সংখ্যা ১৭৫০০০ এর উপরে। বর্তমানে এটার পরিচলনায় আছে
Department for Environment, Food
and Rural Affairs.
২০০৩ সাল থেকে ইউনেস্কো এটাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এখানে সারা পৃথিবীতে যত রকম প্রজাতির গাছ আছে তার প্রায় ই এখানে আছে। এমনকি আমাজন জঙ্গলের এমন কিছু গাছ আছে যা সচরাচর কোথাও দেখা যায়না। অনেক অনেক দুর্লভ প্রজাতির গাছ এখানে দেখা যাবে। দেখার মতো , শেখার মতো একটা বাগান। শুধু উপভোগ নয় , শুধু বিনোধন নয় আসলেই অনেক শেখার মতো একটা জায়গা। সময় পেলে আরো কিছু তথ্য যোগ করবো। আপাতত আমাদের ছবি গুলা সংযুক্ত করলাম।
কিউ গার্ডেন এর মূল আকর্ষণ সমূহ -
বিশাল বাগান , লক্ষ্ লক্ষ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ , ফুল ,চারা ইত্যাদি। এছাড়া কিউ পেলেস (রাজার বাড়ি ), ট্রি টপ ওয়াক ওয়ে , টেম্পারেচার হাউস ,মেরিয়ানি নর্থ গ্যালারি ,প্যাগোডা , হরেক রকম ওয়াটার লিলি হাউস , কুইন ক্যারোলেট কটেজ ,শীর্ণি বোটানিক্যাল আর্ট গ্যালারি , বি হাইভ এবং লাইব্রেরি ইত্যাদি।
https://youtu.be/yyv9zqML8-M
https://www.google.co.uk/search?q=kew+garden+beehive&newwindow=1&rlz=1C1ILPI_en-GBGB702GB702&espv=2&biw=1366&bih=609&tbm=isch&tbo=u&source=univ&sa=X&ved=0ahUKEwidrcWLs7bOAhVHCMAKHY4gDvYQsAQIKw
 |
অপরূপ সুন্দর চারিদিক। |
 |
আমার মেয়ে লেকের পাড়ে |
 |
মা -মেয়ে |
 |
গার্ডেন এর প্রবেশ মুখ |
 |
দীঘির পাড়ে আমরা |
 |
আমার ছেলে ও মেয়ে মায়ের সাথে |
 |
পিছনে ওটা এক ধরণের ফুল। খুবই দুর্লভ ফুল। |
 |
পিছনে ফুলগুলি খুবই দুর্লভ। |
 |
অপরূপ সুন্দর চারিদিকে। |
 |
৩০০ একর জায়গার জুড়ে বাগান টা। বিশাল এলাকা। একদিন সময় লাগবে ঘুরে বেড়াতে আর ভালো করে নাম ও ইতিহাস জানতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও ফুল গুলির। |
 |
অতি আধুনিক প্রযুক্তির মোমাছির হাইভ। এটার লিংক লেখার মধ্যে আছে। |
 |
মৌমাছির হাইভ |
 |
আধুনিক রাখাল বালক গাছের নিচে বিশ্রাম করছে। |
 |
পিছনের থালা আকৃতির গাছগুলু খুবই দুর্লভ / একমাত্র আমাজন জঙ্গলে দেখা যায় / এক ধরণের ওয়াটার লিলি প্ৰজাতি। |
 |
আরেক ধরণের ওয়াটার লিলি |
 |
রাজ্ প্রাসাদের ভলান্টিয়ার |
 |
রাজা তৃতীয় জর্জ। কিছুকাল পাগল ছিল। তখন কিউ গার্ডেন প্রাসাদে কয়েক বছর ছিল। |
 |
রাজার বসার আসন |
 |
এই মেয়েটি রাজা জর্জ এর মেয়ে প্রিন্সেস ক্যারোলিন এর সাথে অনেকখানি মিল। যে ৩৫০ বছর আগে মারা গিয়েছে। |
 |
প্রিন্সেন্স ক্যারোলাইন এর সাথে যার অনেকখানি মিল আছে। |
 |
এই বিশাল তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হর্টিকালসার সেন্টার এ বৈজ্ঞানিক উপায়ে বিশেষ প্রজাতির হাজারও গাছের অবস্থান। উচ্চ তাপমাত্রার স্টিম এর ব্যবস্থা আছে। কারো যদি স্টিম বাথ করার ইচ্ছে থাকে এখানে যেতে পারেনা। |
 |
গ্রীন হাউস। হর্টিকালসার ভবন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ। |
 |
বিশেষ প্রজাতির ফুল। খুবই দুর্লভ। |
 |
গাছের উপর দিয়ে ব্রিজ
|
 |
এই ঘরের ভিতর বিশ্বের সব দুর্লভ গাছ আছে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে তাপমাত্রা এবং পরিমান মতো আলোর ব্যবস্থা আছে |
 |
কিউ প্যালেস ( অবসর বিনোদনের রাজ্ প্রাসাদ - ৪০০ বছর আগের , এখনো দেখতে নুতন লাগে ) |