গত কযেকদিন ধরে ফিলিস্তিনে যা ঘটছে দেখলাম?? ভাবতে খুব কষ্ট হয়, কান্না আসে- কিভাবে ইসরাইলিরা এত নিষ্ঠুর হতে পারে যখন দেখি নির্বিচারে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের! রেহাই পাচ্ছেনা অসহায় শিশু। আর কত রক্ত চাই তোমাদের? ধিক্কার জানাই , চরম ঘৃনা প্রকাশ করছি তোমাদের প্রতি। এমনিতেই একজন ইসরাইলি(যদি জানি ) আমার পাশে বসলে চরম ঘৃণায় আমি তার পাশ থেকে সরে বসি। আমেরিকা আজ তুমি নিরব কেনো? মনে মনে হাসি আমেরিকা তুমি সারা বিশ্বে মানবতার কথা বলো। তুমি বাংলাদেশে মানবতার কথা বলো, গণতন্ত্রের কথা বলে ফেনা তোলো। তুমি ইউক্রেনের খ্রিমিয়া ইস্সুতে সারা ইউরোপ, যুক্তরাজ্য সহ অনেককে এক করে ফেলেছিলে -শুধু মানবতার দোহাই দিয়ে , গনতন্তের কথা বলে। মানুষ ভুলে নাই আফগানিস্তান , ইরাক, সিরিয়া , মিশর , লিবিয়া সহ নানা দেশেতোমার ভুমিকা। আর গত একযুগ ধরে ইসরাইলিরা নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের। তুমি কি তা দেখতে পাওনা? পাবেনা তো কারণ তুমি তো আছ্ সারা বিশ্বে মুসলমানদের যত ভাবে সম্ভব সন্ত্রাসী প্রমানে। কারণ ইসরাইলিরাতো তোমার একমাত্র ঈহদী ভাই। সে কারণে তুমি আজ অন্ধ!! একমাত্র তাদের জন্যই মধ্যপ্রাচ্য আজ অশান্ত জনপদ। প্রয়োজনে যত কুঠ কৌশল আছে তা তো তুমি করেই যাচ্ছ। শুধু মাত্র তোমার ভাইদের রক্ষার জন্য। তাদের সামান্য আবাস ভুমিটুকুও তোমরা গ্রাস করতে চাও ! এক সময় ইসরাইলের দখলকৃত এলাকা ছিল ১৬০০০ বর্গ মাইল আর এখন তারা অফিসিয়ালি ২২০০০ বর্গ মাইল এর মালিক আর আনঅফিসিয়ালি আরো বেশি জায়গা দখল করে আছে। কোনো বিচার নাই। মূল উদ্দেশ্য ফিলিস্তিনিদের একেবারে দেশ ছাড়া করা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং ইতিহাস আজ আর কারো অজানা নেই। তারা লড়ছে মাতৃভূমির জন্য। আমি বুজতে পারিনা ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের এই যুদ্দ্ব -বিবাদ আর কতকাল চলবে ? আরব বিশ্বের এই কলুষিত রাজনীতি আর কতকাল চলবে? কার জন্য, কার স্বার্থে, কার অপরাধে ফিলিস্তিনের মুসলমানরা যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত হচ্ছে , মরছে পশু -পাখির মতো। রেহাই পাচ্ছেনা অসহায় শিশু আর মেয়েরাও ! আমেরিকা যদি ইসরাইলের স্বার্থে একচোখা এবং উলঙ্গ হতে পারে তবে আরব বিশ্ব কেনো কঠোর হতে পারেনা। আমি বুজে উঠতে পারিনা সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত সহ অনেক ধনী আরব রাষ্ট্রগুলো কখনো ফিলিস্তিনের বেপারে সোচ্চার হয় নাই। কেনো ? কেনো OIC তার সঠিক ভুমিকা নিতে পারলনা ? আমরা কি রকম মুসলিম। আমার মুসলিম ভাইগুলো ইরাক, সিরিয়া , ফিলিস্তিন, লিবিয়া, মিশর সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে নিজেরা নিজেদেরকে মারছে, কিংবা মরছে প্রতিপক্ষের আক্রমনে ! কিংবা আমেরিকা কিংবা বৃটেনের দালালেরা হত্যা করছে নানা চলচাতুরী দিয়ে ! কেন ? আমরা কি চিরকাল বকাই থাকব ? না মাথা কাজ করছেনা আমার!
আমরা আসলেই কি সত্যিকারের মুসলমান ? তবে কেনো আরব শক্তিগুলো চুপ করে থাকে ? কেনো আরব শক্তিগুলো কঠোর হতে পারে না -কিংবা হয়না? তোমার প্রতিবেশী দেশে নির্বিচারে হত্যা করছে আর তুমি চেয়ে আছ , কেন ? তোমার চেতনা কি মরে গেছে ? তুমি কি পারনা একদিনের জন্য হলেও প্রতিবাদ স্বরূপ আমেরিকা এবং পশ্চিমাদের তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিতে ! জানি তুমি চাওনা ? কারণ হলো সমগ্র আরব বিশ্বের ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রগুলোর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিযোগ হয়েছে আমেরিকা , যুক্তরাজ্য কিংবা ইউরোপের অনেক দেশে! আরব বিশ্বের ক্ষমাতধর ব্যক্তিরা হলো আমেরিকা,যুক্তরাজ্য কিংবা ইউরোপের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক। একটা উদাহরণ দিলেই অনেকটা পরিস্কার হয়ে যাবে। News of the world, Sky TV ইত্যাদি, এছাড়াও এর বেনারে আছে আরো অনেক স্বনামধন্য ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা। আমাদের ধারণা এই সব প্রতিষ্টানের মালিক পশ্চিমারা। হা; তারা মালিক তবে সামান্য! রুপার্ট মারডক(চেয়ারম্যান sky tv, the times, News of the world)এর ইনভেস্টমেন্ট এর পরিমান হচ্ছে মাত্র ১৯ বিলিয়ন আর পক্ষান্তরে সৌদি বাদশার ভাতিজা Al Waleed bin Talal এর ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে ৪২ বিলিয়ন ! এরকম ইউরোপ , ইউকের অনেক নামকরা ফুটবল ক্লাব কিংবা সুপার মল এর মালিক এই সব আরবরা ! বিখ্যাত শপিং মল Herrods এর মালিক হলো কাতারের রাজা। যেটাতে পাওয়া যায়না এমন কিছু নেই ! কোনো কোনো বিশেষ পন্যের মুল্য কয়েক কোটি টাকার মত। এরকম আরো হাজারও প্রিন্স কিংবা রাজার ব্যবসা আছে বড় বড় প্রতিষ্টান গুলোর সাথে যেগুলো আমরা জানিনা। প্রতিটি আরব ধনী ব্যক্তির লন্ডন , আমেরিকা কিংবা ফ্রান্স এ নুন্যতম একটা দামী বাড়ি আছে ! আমেরিকা , যুক্তরাজ্যর কিংবা ইউরোপের অন্যতম দামী বাড়িগুলোর মালিক কিন্তু আরব শেখেরা। তাদের নিরাপদ ঠিকানাতো প্রতিবেশী আরব দেশ নয় ! তাদের নিরাপদ ঠিকানা তো এই সব দেশ ? তাদের কাছে তাদের ব্যবসাটাই অনকে মূল্যবান। কে মরলো ফিলিস্তিনে কিংবা সিরিয়া তে তাতে তাদের কিছু এসে যায়না! ধর্ম কিংবা মানবতা হলো অনেক পরে ! আমি বুজিনা সৌদি আরব কতকাল মোড়লের ভূমিকায় থাকবে যদি না তারা মুসলিম বিশ্বকে সুসংগঠিত করতে পারে। কিংবা প্রতিবাদী হতে না পারে। এইভাবে তো চলতে পারেনা। আমি মনে করি সব মুসলিম রাষ্ট্রেরই নুতন করে ভাবা উচিত! কারণ এখন ধর্মের দোহাই দিয়ে অর্থনীতি চলেনা! চলে শুধু রাজনীতি! ধর্মকে সবসময় এইসব লুটেরা গোষ্টি নিজেদের স্বার্থের জন্য যুগে যুগে ব্যবহার করে আসছে। যদি অর্হনীতিই হয় একটি রাষ্টের মূল বিবেচ্য বিষয় তবে আমি মনে করি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি না করে, নিজেরা নিজেরা হানা হানি, মারা মারি না করে কিংবা সুন্নি, ওয়াহাবী, খারেজি কিংবা শিয়া, খুর্দি , আলেবি , কাদিয়ানি এইসব বিতর্কে নিজেরকে ধংস না করে বরংচ দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে কাজ করা এবং সময় দেওয়া অনেক জরুরী। কারণ গত কয়েক বছর ধরে এই সব বিতর্কে গোত্রীয় কতৃত্ব, কিংবা ক্ষমতার লোভে অধিকংশ মুসলিম রাষ্ট্রের জনগণ নিজেদের মধ্যে রক্তখয়ী মারা মারিতে লিপ্ত। যা মরেছে তা ফিলিস্তিনে ১০ বছরে মারা যাওব লোকের চেয়েও অনেক বেশি। কেও কেও নানা ভুল পন্থায় জিহাদী হয়েছে, কিংবা ইসলামকে পশ্চিমাদের স্বার্থে অপবাবহার করেছে ! বোমা হামলা করে বলেছে ইসলাম প্রতিষ্টার জন্য এই হামলা। আসলে এই সব ছিল নিজেদের স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহারের একটা চালাকি ! যার কারনে এইসব অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ্ রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতি দিনে দিনে পঙ্গু হতে চলেছে। আমাদের সব সময় বুজতে হবে ধর্মকে ব্যবহার করে কেও কেও ফায়দা নিচ্ছে আর তারা কিন্তু প্রকৃত ইসলামের বন্ধু নয়. তারা যদি সত্যি বন্ধু হত তবে তারা সারা বিশ্বে গণজাগরণ সৃষ্টি করে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারতো। কিন্তু তারা আসলে তা চায়না। আমি সমস্ত গণহত্যার নিন্দা জানাই ! আমার নিন্দায় কারো কিছূ আসে যায় না তারপরও একজন মানুষ হিসেবে, একজন মুসলমান হিসেবে নিন্দা জানানো আমার কর্তব্য। মুসলিম বিশ্বের মোড়লদের কাছে করজোড়ে বিনীত অনুরোধ জানাই আমেরিকার-পশ্চিমাদের দালালি বন্ধ করে সত্যের পক্ষে, মানবতার পক্ষে প্রতিবাদী ভুমিকা নেয়ার জন্য। ফিলিস্তিনের ভাইয়েরা তোমাদের জন্য আমরা কিছু করতে না পারলেও জেনে রেখো তোমাদের বেদনায় আমরাও মর্মাহত। আমি তোমাদের এই নির্যাতন, হত্যাকান্ডের চরম নিন্দা জানাই আর আমার সমস্ত ঘৃনা প্রকাশ করলাম ইসরাইলি জান্তার প্রতি ! আরববিশ্ব দোহাই আর চোখ বন্ধ করে রেখোনা !
কি অপরাধ এই শিশুগুলোর ??? আর কতকাল তারা এভাবে হত্যা করেই যাবে ?